যে দেশে ১০০ বছরেও জন্ম হয়নি কোনো শিশুর

ছবি সংগৃহীত

 

ফিচার ডেস্ক :জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে অষ্টম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর সূত্রে জানা যায় বাংলাদেশে প্রতি মিনিটে জন্ম নেয় ৯ শিশু। দিন দিন বেড়েই চলেছে এই সংখ্যা। বিশ্বের জনসংখ্যা কোনোভাবেই থেকেমে নেই। মৃত্যুর চেয়ে জন্মহার বেশি।

 

এমন এক পরিস্থিতিতে যদি বলা হয় এমন এক দেশ আছে যেখানে ১০০ বছরের মধ্যে কোনো শিশুর জন্ম হয়নি। এমনকি একবিংশ শতাব্দীতে এসে সে দেশে একটিও হাসপাতাল নেই। ব্যাপারটা বিশ্বাস করাও বেশ কঠিন বৈকি!

 

বলছিলাম পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম দেশ ভ্যাটিকান সিটির, রোমান ক্যাথলিক গির্জার প্রধানের আবাসস্থল। ভ্যাটিকান সিটি বিশ্বের সবচেয়ে ছোট দেশ। ভ্যাটিকান সিটি বা ভ্যাটিকান সিটি স্টেট একটি স্থলবেষ্টিত দেশ। অতীতে দেশটি ইতালির রোমের অংশ ছিল।

 

১৯২৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ‘ল্যাটেরান চুক্তি’র মাধ্যমে ইতালি থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ভ্যাটিকান সিটি। বিশ্বব্যাপী সমস্ত ক্যাথলিক গির্জা এবং ক্যাথলিক খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, ভ্যাটিকান সিটিতেই তাদের শিকড় লুকিয়ে।

আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর আজ পর্যন্ত ভ্যাটিকান সিটিতে একটিও শিশু জন্মগ্রহণ করেনি। অর্থাৎ ১৯২৯ সালের পর সে দেশে কোনো শিশু জন্ম নেয়নি। দেশ গঠনের পর থেকে কোনো হাসপাতালও তৈরি হয়নি ভ্যাটিকান সিটিতে। অসংখ্য আর্জি জানানো সত্ত্বেও নাকি সে দেশে হাসপাতাল নির্মাণের অনুমতি মেলে না। ফলস্বরূপ গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তি বা অন্তঃসত্ত্বাদের চিকিৎসার জন্য রোমে যেতে হয়।

 

মনে করা হয়, সীমিত ভৌগোলিক আকার এবং প্রতিবেশী রোমে উচ্চমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকার কারণেই নাকি দেশের মধ্যে হাসপাতাল তৈরি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ। ভ্যাটিকান সিটি মাত্র ১১৮ একর জমি জুড়ে বিস্তৃত। এর ফলে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব রোগীকে রোমের হাসপাতাল বা চিকিৎসাকেন্দ্রে স্থানান্তরিত করতে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না।

 

ভ্যাটিকান সিটির মধ্যে কোনো প্রসূতিবিভাগ না থাকার কারণেও সে দেশের সীমানার মধ্যে কোনো শিশু জন্ম নেয় না। এর থেকেই স্পষ্ট যে, কেন বিগত প্রায় ১০০ বছরে ভ্যাটিকান সিটিতে কোনো শিশুর জন্ম রেকর্ড করা হয়নি।

ভ্যাটিকান সিটির জনসংখ্যা সর্বসাকুল্যে ৮০০-৯০০ জন। এদের মধ্যে অনেকেই বর্ষীয়ান ক্যাথলিক ধর্মযাজক। ভ্যাটিকান সিটির জনসংখ্যা কম হলেও অপরাধের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। সেই সব অপরাধের মধ্যে বেশির ভাগই দোকান লুট, ব্যাগ ছিনতাই এবং পকেটমারির মতো ঘটনা। তবে এই পরিস্থিতি তৈরির জন্য বিদেশি পর্যটকদেরই দায়ী করেন স্থানীয়েরা।

 

ভ্যাটিকান সিটিতে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট রেলওয়ে স্টেশনও রয়েছে। ‘সিটা ভ্যাটিকানো’ নামে ওই স্টেশনে দু’টি রেললাইন রয়েছে। প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৩০০ মিটার। পোপ পিয়াস একাদশের শাসনকালে নির্মিত রেললাইন এবং স্টেশনটি কেবল পণ্য পরিবহনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। যাত্রিবাহী ট্রেন ভ্যাটিকান সিটির মধ্যে চলাচল করে না।

ব্রিটেন নিয়ন্ত্রিত দ্বীপপুঞ্জ পিটকেয়ার্নের জনসংখ্যা ৫০ জনেরও কম। ফলে বেশ কয়েক বছর ধরে সেখানেও কোনো শিশুর জন্ম হয়নি। যদিও পিটকেয়ার্ন কোনো দেশ নয়।  সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ভিপি নুরকে আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর

» ডাকসু নির্বাচন ভণ্ডুলের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার

» নির্বাচন ইস্যুতে কোনো ব্লেম নিতে রাজি নই, শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করবো: সিইসি

» অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস সেনাপ্রধানের

» জনগণের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে: সেনাপ্রধান

» প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সেনাপ্রধানের বৈঠক ‌‌‘গুজব’: আইন উপদেষ্টা

» জামালপুরে আট মাস পর সাংবাদিক নূরুল হকের মরদেহ উত্তোলন

» এখন নতুন দামে আরও বেশি সহজলভ্য অপো রেনো১৩ এফ

» টোয়াব আয়োজিত দেশের সর্ববৃহৎ আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা-বিটিটিএফ শুরু ৩০ অক্টোবর

» এএমএল চ্যাম্পিয়নদের সম্মাননা দিলো ব্র্যাক ব্যাংক

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

যে দেশে ১০০ বছরেও জন্ম হয়নি কোনো শিশুর

ছবি সংগৃহীত

 

ফিচার ডেস্ক :জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে অষ্টম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর সূত্রে জানা যায় বাংলাদেশে প্রতি মিনিটে জন্ম নেয় ৯ শিশু। দিন দিন বেড়েই চলেছে এই সংখ্যা। বিশ্বের জনসংখ্যা কোনোভাবেই থেকেমে নেই। মৃত্যুর চেয়ে জন্মহার বেশি।

 

এমন এক পরিস্থিতিতে যদি বলা হয় এমন এক দেশ আছে যেখানে ১০০ বছরের মধ্যে কোনো শিশুর জন্ম হয়নি। এমনকি একবিংশ শতাব্দীতে এসে সে দেশে একটিও হাসপাতাল নেই। ব্যাপারটা বিশ্বাস করাও বেশ কঠিন বৈকি!

 

বলছিলাম পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম দেশ ভ্যাটিকান সিটির, রোমান ক্যাথলিক গির্জার প্রধানের আবাসস্থল। ভ্যাটিকান সিটি বিশ্বের সবচেয়ে ছোট দেশ। ভ্যাটিকান সিটি বা ভ্যাটিকান সিটি স্টেট একটি স্থলবেষ্টিত দেশ। অতীতে দেশটি ইতালির রোমের অংশ ছিল।

 

১৯২৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ‘ল্যাটেরান চুক্তি’র মাধ্যমে ইতালি থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ভ্যাটিকান সিটি। বিশ্বব্যাপী সমস্ত ক্যাথলিক গির্জা এবং ক্যাথলিক খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, ভ্যাটিকান সিটিতেই তাদের শিকড় লুকিয়ে।

আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর আজ পর্যন্ত ভ্যাটিকান সিটিতে একটিও শিশু জন্মগ্রহণ করেনি। অর্থাৎ ১৯২৯ সালের পর সে দেশে কোনো শিশু জন্ম নেয়নি। দেশ গঠনের পর থেকে কোনো হাসপাতালও তৈরি হয়নি ভ্যাটিকান সিটিতে। অসংখ্য আর্জি জানানো সত্ত্বেও নাকি সে দেশে হাসপাতাল নির্মাণের অনুমতি মেলে না। ফলস্বরূপ গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তি বা অন্তঃসত্ত্বাদের চিকিৎসার জন্য রোমে যেতে হয়।

 

মনে করা হয়, সীমিত ভৌগোলিক আকার এবং প্রতিবেশী রোমে উচ্চমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকার কারণেই নাকি দেশের মধ্যে হাসপাতাল তৈরি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ। ভ্যাটিকান সিটি মাত্র ১১৮ একর জমি জুড়ে বিস্তৃত। এর ফলে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব রোগীকে রোমের হাসপাতাল বা চিকিৎসাকেন্দ্রে স্থানান্তরিত করতে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না।

 

ভ্যাটিকান সিটির মধ্যে কোনো প্রসূতিবিভাগ না থাকার কারণেও সে দেশের সীমানার মধ্যে কোনো শিশু জন্ম নেয় না। এর থেকেই স্পষ্ট যে, কেন বিগত প্রায় ১০০ বছরে ভ্যাটিকান সিটিতে কোনো শিশুর জন্ম রেকর্ড করা হয়নি।

ভ্যাটিকান সিটির জনসংখ্যা সর্বসাকুল্যে ৮০০-৯০০ জন। এদের মধ্যে অনেকেই বর্ষীয়ান ক্যাথলিক ধর্মযাজক। ভ্যাটিকান সিটির জনসংখ্যা কম হলেও অপরাধের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। সেই সব অপরাধের মধ্যে বেশির ভাগই দোকান লুট, ব্যাগ ছিনতাই এবং পকেটমারির মতো ঘটনা। তবে এই পরিস্থিতি তৈরির জন্য বিদেশি পর্যটকদেরই দায়ী করেন স্থানীয়েরা।

 

ভ্যাটিকান সিটিতে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট রেলওয়ে স্টেশনও রয়েছে। ‘সিটা ভ্যাটিকানো’ নামে ওই স্টেশনে দু’টি রেললাইন রয়েছে। প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৩০০ মিটার। পোপ পিয়াস একাদশের শাসনকালে নির্মিত রেললাইন এবং স্টেশনটি কেবল পণ্য পরিবহনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। যাত্রিবাহী ট্রেন ভ্যাটিকান সিটির মধ্যে চলাচল করে না।

ব্রিটেন নিয়ন্ত্রিত দ্বীপপুঞ্জ পিটকেয়ার্নের জনসংখ্যা ৫০ জনেরও কম। ফলে বেশ কয়েক বছর ধরে সেখানেও কোনো শিশুর জন্ম হয়নি। যদিও পিটকেয়ার্ন কোনো দেশ নয়।  সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com